ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক স্কুল শিক্ষিকা অক্সিজেনের অভাবে মারা গেছেন বলে অভিযোগ করেছেন স্বজনরা। সোমবার (৩০ মার্চ) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ওই নারীর মৃত্যু হয়।
মারা যাওয়া রিপা দাস (৩২) রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার রামকল গ্রামের মিঠুন সরকারের স্ত্রী। তিনি রামকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা ছিলেন। ফরিদপুরের টেপাখোলা এলাকার অনিল কুমার দাসের মেয়ে রিপা। চার বছরের বিবাহিত জীবনে প্রথম সন্তানসম্ভবা ছিলেন তিনি।
রিপার ভগ্নিপতি ধীরাজ কুমার বলেন, রিপা আড়াই মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। হঠাৎ রক্তক্ষরণ হওয়ায় রোববার (২৯ মার্চ) দুপুর ২টার দিকে তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসকরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এমআর (গর্ভপাত) করাতে বলেন।
এরপর রোববার সন্ধ্যা ৭টার দিকে রিপাকে অপারেশন থিয়েটারে নেয়া হয়। তাকে এমআর করান ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. কানিজ ফাতেমা।
সোমবার সকাল ৭টার দিকে সেখান থেকে তাকে বের করে বেডে দেয়া হয়। এ সময় রিপার প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। দীর্ঘক্ষণ হাসপাতালের নার্স ও ইন্টার্নদের কাছে অনুরোধ করেও অক্সিজেন দেয়ার ব্যবস্থা করতে পারেননি। প্রায় এক ঘণ্টা পর অক্সিজেন সিলিন্ডার আনা হয়। তার আগেই মারা যান রিপা। দুপুরে তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় রামকল গ্রামে।
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. কানিজ ফাতেমা বলেন, অস্ত্রোপচারের পর রোগীর অবস্থা ভালো ছিল। সকালে হঠাৎ তার অবস্থার অবনতি ঘটায় মৃত্যু হয়। অক্সিজেনের অভাবে ওই রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে আমার জানা নেই। এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।
এদিকে শহরের পশ্চিম খাবাসপুর মহল্লার ব্যবসায়ী দিলদাল হোসেন বলেন, রোববার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত দুই ঘণ্টা টিকিট কেটে বসে থেকেও চর্মবিষয়ক কোনো চিকিৎসককে দেখাতে পারিনি।
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক সাইফুর রহমান বলেন, চিকিৎসকরা সরকারি নির্দেশনা মেনে রোগী দেখছেন। এখানে এসে চিকিৎসা পায়নি এমন অভিযোগ আমাকে কেউ দেয়নি।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন এমপি বলেন, হাসপাতালে এসে রোগীরা ঠিকমতো চিকিৎসাসেবা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ পেয়েছি।
তিনি বলেন, এই সংকটকালে চিকিৎসকদের প্রতি মানুষের আস্থা ও ভরসা বেশি। তাই চিকিৎসকদের কর্তব্যকাজে গাফিলতি করার সুযোগ নেই। সমস্যা সমাধানে সোমবার বিকেলে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে চিকিৎসকসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে জরুরি সভা ডাকা হয়েছে।
পাঠকের মতামত: